Pages

Ads 468x60px

Wednesday, December 14, 2011

 দুর্লভ লালমাথা টিয়া

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে জিগাগাছে স্ত্রী লালমাথা টিয়া
ছবি: লেখক
‘লালমাথা টিয়া’ (Plum-headed Parakeet)। বর্তমানে ঢাকা ও খুলনা বিভাগের কোনো কোনো এলাকায় গ্রামীণ পরিবেশে কদাচ দেখা যায়। এদের বৈজ্ঞানিক নাম Psittacula cyanocephala.
লালমাথা টিয়া আমাদের সাধারণ ‘গোলাপিকণ্ঠী’ টিয়ার চেয়ে আকারে ছোট। লম্বায় ৩৩ সেন্টিমিটার, যার মধ্যে লেজই ২২ সেন্টিমিটার। ওজন ৬৫ গ্রাম। দেহের রং হলদে-সবুজ বা হালকা সবুজ। এদের লেজ চিকন এবং ঠোঁট হুকের মতো বাঁকানো। চিবুক কালচে। লেজ নীলচে-সবুজ; লেজের আগা সাদা। পুরুষ টিয়ার মাথার রং প্লাম ফলের মতো বেগুনি লাল। এদের ঘাড় ও গলাজুড়ে থাকে কালো রঙের একটি কলার। কাঁধে আছে মেরুন-লাল দাগ। স্ত্রী টিয়ার মাথার রং হালকা ও ধূসর, যা হলুদ রঙের কলার দিয়ে ঘেরা থাকে। এদের কাঁধের ওপরের দাগটিও হলুদ। স্ত্রী-পুরুষনির্বিশেষে পা ও পায়ের নালা সবুজে-ধূসর। বাচ্চাদের পুরো দেহ সবুজে মোড়ানো। মাথা সবুজ, গাল ও কপাল হলদে। মাথার রং ও লেজের আগার সাদা দাগের মাধ্যমে এদের ফুলমাথা টিয়া (Eastern Blossom-headed Parakeet) থেকে পৃথক করে চেনা যায়।
লালমাথা টিয়া বনের প্রান্ত যেখানে কৃষিজমির সঙ্গে মিলেছে সেখানে, ফলের বাগানে ও খোলা বনে থাকতে পছন্দ করে। এরা সচরাচর ছোট দলে থাকে। বশেমুরকৃবিতে আমি একসঙ্গে পাঁচটি লালমাথা টিয়া দেখেছি। এরা পাকা ফল, ফুল ও ফসল দেখলে খেতে নেমে আসে। এরা শস্য, ফল, কুঁড়ি, ফুলের পাপড়ি ও নির্যাস খেতে পছন্দ করে। বশেমুরকৃবিতে এদেরকে জিগাগাছের ছোট ছোট সবুজ ফল ও কদম ফুল খেতে দেখেছি। এরা টুই-টুই-টুই-টুই-টুই-টুই স্বরে ডাকে। উড়ন্ত অবস্থায় বেশি ডাকে।
জানুয়ারি থেকে এপ্রিল এদের প্রজননকাল। এরা যেকোনো গাছের জুতসই কোনো খোঁড়লে বাসা বাঁধে। কাঠঠোকরা, বসন্তবৌরি বা অন্যান্য খোঁড়লবাসী পাখির বাসা দখল করে নিজেদের মতো করে সাজিয়ে নেয়। অনেক সময় কাঠের ছিলকা দিয়ে বাসার লাইনিং তৈরি করে। স্ত্রী লালমাথা টিয়া চার থেকে ছয়টি সাদা ডিম পাড়ে। prothom-alo
Reade more >>

Friday, December 9, 2011

বাইক্কা বিলে বিরল পাখি

বাইক্কা বিল থেকে পাওয়া ‘বড়ঠোঁট চুটকি’ বাইক্কা বিল থেকে পাওয়া ‘বড়ঠোঁট চুটকি’
ছবি: প্রথম আলো
বাইক্কা বিলে বিরল প্রজাতির এক পরিযায়ী পাখির দেখা পাওয়া গেছে। পাখি পর্যবেক্ষকেরা বলেছেন, পাখিটির নাম ‘বড়ঠোঁট চুটকি’। এটি বিশ্বব্যাপী অতিসংকটাপন্ন প্রজাতির একটি পাখি। গত ১০ বছরে থাইল্যান্ডে মাত্র দুটি পাখি দেখা গেছে। তৃতীয়বার দেখা গেল মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে।
শ্রীমঙ্গল উপজেলার হাইল হাওরের ‘বাইক্কা বিল অভয়াশ্রমে’ গবেষণার জন্য বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের গবেষক দলের পাতা ফাঁদে ৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় এ পাখি ধরা পড়ে।
বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের সভাপতি ইনাম আল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘এই পাখি সম্পর্কে খুব একটা তথ্য কারও জানা নেই। গত ১০ বছরে থাইল্যান্ডে দুবার এ প্রজাতির দুটি পাখি দেখা যাওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। বাংলাদেশে এর আগে কোথাও এ পাখি দেখা যায়নি। এর ইংরেজি নাম Largebilled Warbler থেকে বাংলায় ‘বড়ঠোঁট চুটকি’ নাম রাখা হয়েছে। পাখিটির বৈজ্ঞানিক নাম Acrocephalus orinus। মেটে রঙের এ পাখির ওজন ১০ গ্রাম। তবে পাখিটি পরিযায়ী—এটা ধারণা পাওয়া গেছে।’
ইনাম আল হক জানান, বাংলাদেশের নামাঙ্কিত রিং পাখিটির পায়ে পরিয়ে ধরা পড়ার আধঘণ্টার মধ্যেই বিলে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
গবেষক দলের অপর সদস্য থাইল্যান্ডের মাহিদল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক ফিলিপ রাউন্ড প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ পাখির দেখা পাওয়ার পর দলের সবাই আনন্দে আত্মহারা। বাইক্কা বিলে আসা আমাদের সার্থক হয়েছে। আর এটা আবারও প্রমাণিত হয়েছে যে বাইক্কা বিলটি পাখিবৈচিত্র্যের দিক থেকে অনন্য। পৃথিবীতে অনেক অজানা বিষয় রয়েছে। এই পাখি সম্পর্কে তেমন বিস্তারিত তথ্য আমাদের কাছে নেই। পাখিটির পায়ে রিং পরানোর সৌভাগ্য আমাদের হয়েছে। আর এর পায়ে যে রিং পরানো হয়েছে, এতে বাংলাদেশের নাম রয়েছে। এর মাধ্যমে এ প্রজাতির পাখি সম্পর্কে দীর্ঘমেয়াদি গবেষণায় বাংলাদেশের নামটি যুক্ত হয়েছে।’
এ বছর শীতের শুরু থেকেই হাইল হাওরের বিভিন্ন বিলে প্রচুর দেশি ও বিদেশি পরিযায়ী পাখি আসতে শুরু করেছে। এর মধ্যে বাইক্কা বিলকে সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণা করায় পাখির সংখ্যা আগের বছরগুলোর তুলনায় এবার অনেক বেড়েছে।
বিশ্বজ্যোতি চৌধুরী, শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রথম আলো
Reade more >>